রুয়েট ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিনিধি

0
10

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসফাক ইয়াসির ইপু ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান তপুর মিথ্যাচার মুলক মানববন্ধনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রলীগ কর্মী তানভির আহমেদ আবির ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সামিউর রহমান আল নাহিয়ান।

৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় নগরীর অভিজাত রেষ্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উক্ত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রুয়েট ১৩ সিরিজের EEE ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র তানভির আহমেদ আবির। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবস আমাদের বাঙ্গালী জাতির জন্য কলঙ্কময় দিন । এই দিনে অর্থাৎ ৩রা নভেম্বর রুয়েট ছাত্রলীগ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নির্দেশে সহ-সভাপতি ওসমান হায়দার তমাল ও তার দলবল নিয়ে এসে আমাদের উপর চড়াও হয় এবং আমাদের চলে যেতে বলে। অথচ আমি এই ক্যাম্পাসের একজন ছাত্র। তারা আমার ছাত্র হিসেবে মৌলিক অধিকার, আমার নাগরিক অধিকার হরনের চেষ্টা করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি ।

এরপর রুয়েটে পুলিশ প্রশাসন আসলে ইপু বাহিনী ডাইরেক্ট এ্যাকসন স্লোগান দিতে থাকে এবং আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। ৩রা নভেম্বর এর মত দিনে এমন শ্লোগান যা অত্যন্ত নিন্দনীয় । আমি এই বিষয়টিরও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি । এরপর পুলিশ প্রশাসন আমাদের অনুরোধ করলে আমরা তাদের প্রতি ও ৩রা নভেম্বর এর দিনটির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাই । তবে আমাদের ৩-৪ জন সহকর্মী একটু পেছনে পরে যায় । তাদের একা পেয়ে ইপু ও তপুর নির্দেশে তাদের মারধোর ও লাঞ্ছিত করে। মারধরের শিকার হওয়া প্রত্যেকেই আবাসিক হলের ছাত্র।

এছাড়াও তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিচালিত এম.এ. ওয়াজেদ মিয়া সাইনস একাডেমীতে করোনা কালীন সময়ে সারা বাংলাদেশে বিনা পারিশ্রমিকে টিউশন প্রদান করে । পরবর্তীতে আমরা আরো জানতে পারি যে আমাদের অন্যান্য সমর্থনকারী সহকর্মী যারা হলের আবাসিক ছাত্র তাদের রুমে এক্সট্রা তালা লাগানো হয় এবং তাদের বিভিন্ন মাধ্যম হতে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের ছাত্র হিসেবে মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে । আমি এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং বর্তমানে আমাদের সমর্থক সহকর্মীরা তাদের জীবন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা প্রশাসনের সহাযোগিতা কমনা করছি।
এছাড়াও ৪ঠা নভেম্বর ইপু-তপুর তত্ত্বাবধানে মিথ্যাচার মূলক মানববন্ধন করে এবং সেখানে আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এমনকি আমাদের জামায়েত-বিএনপি ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী পরিবার বলা হয়েছে। আমার বাবার নামে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য রটানো হয় যে, তাকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে, আমাকে জনসম্মুখ্যে সন্ত্রাসী বলা হয়েছে । অথচ আমার বাবা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অবসরগ্রহন ও নিয়মিত অবসর ভাতা উত্তোলন করেন । যার প্রমান আমার সাথে রয়েছে ।
আমার নানা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তার গেজেট নং ১০৭৪ । তারা একজন মুক্তিযোদ্ধাকে ও একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে যা মহান মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করার শামিল । আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমার পরিবার থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর একটি চিঠি প্রেরন করবো যাতে এই অসম্মানের সঠিক বিচার পাই । আমার বাবার অসম্মানের জন্য অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো ।
আজকে আপনাদের সামনে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশ্নবিদ্ধ কমিটির কিছু অজানা তথ্য তুলে ধরতে চাই । যারা এই মিথ্যাচারমূলক মানববন্ধন আয়োজন করেছিলেন তাদের পরিচয় কী ? ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসফাক ইয়াসসির ইপু, রুয়েট ছাত্রলীগ কর্মী অপহরন মামলায় গ্রেপ্তার হোন এবং ৩ দিনের রিমান্ড এ তাকে নেওয়া হয় যা তৎকালীন সময়ে দেশের বেশ কয়েকটি পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ হয়েছেছিল।
২০১৮ সালের ৮ই মার্চ ছাত্রলীগ হয়ে ছাত্রলীগের অন্য গ্রুপ। যারা হামিদ হলে অবস্থানরত ছিলো তাদের উপর হামলা ও লুটপাট চালানো হয় এবং তখন ইপুকে হাশুয়া ও পিস্তলসহ সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায় । যার প্রমান সংরক্ষিত রয়েছে।
বাংলাদেশের জেল হত্যা দিবস ৩রা নভেম্বর ও ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক একটি দিন। এইসব দিনগুলোকেই বেছে নিয়ে এদের সহিংসতা করার মনোভাব কি প্রমানিত হয় না? তাদের মূল উদ্দেশ্যটা আসলে কী ?
মানববন্ধনকারীদের আরেকজন তপু। উনার নামেও একটি মামলা চলমান। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে রুয়েট ছাত্রলীগের সদস্যকে বহিরাগতদের নিয়ে হত্যা চেষ্টা, তাহলে চিহ্নিত সন্ত্রাসী কে ? যার প্রমান রয়েছে ।
মানববন্ধনকারীদের আরেকজন নাহিদ। যিনি হত্যাচেষ্টা মামলার আরেক আসামী। যাকে গুটি নাহিদ বলে পুরো জিয়া হল জানে এবং চেনে। তিনি এমন কোনো মাদক নেই যে সেবন করেন না এবং মাদক সাপ্লাই দেন না । যার প্রমান রয়েছে । তাহলে মাদকসেবী ও বিক্রেতা কে?
মানববন্ধনকারীর আরেকজন লতিফ, যে কোটা আন্দোলনের সাথে জড়িত এবং আমরা জানি সেই আন্দোলনের সময় বহু জামায়েত-বিনপি এজেন্ডারা সরাসরি সামনের সারীতে দাঁড়িয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত নিতে চেয়েছিলো । জামায়েত-বিএনপি এর অর্থের জোগানে ও মদতে নুরুর অনুসারী এরা । যার প্রমান রয়েছে । আসলে তারা বঙ্গবন্ধুর এই প্রানের সংগঠন ছাত্রলীগকে সুস্থ্য স্বাভাবিক রাখতে চায়না। তাই বলবো কোনো মিথ্যাচারী ও ধোকাবাজীর ছাত্রলীগের জায়গা নেই ।
এবিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়ামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের রাজশাহীর অভিভাবক হিসেবে আমরা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নগর পিতার এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকেই জানি ও বুঝি। রুয়েটে একটু ঝামেলা হয়েছিল কিন্তু এখন স্বাভাবিক আছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগ । তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে জানা নাই। যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের অভিভাবক নগর পিতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাই সমাধান করবে ইনশাআল্লাহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে