যুবলীগের শান্তি সমাবেশ রেখে কেন্দ্রীয় নেতার তোষামুদিতে ব্যস্ত

0
9

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িসহ ষড়যন্ত্র মূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে দলীয় নেতা কর্মীরা। দলে পদ পদবি পেতে চলছে  লবিং- গ্রুপিং ও কেন্দ্রীয় নেতারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়েছে পক্ষপাত মূলক কর্মকাণ্ডে। কেন্দ্র থেকে নির্দেশিত কর্মসূচি বাদ রেখে গাড়ি চালিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের অন্য জেলার সম্মেলনে নিয়ে গিয়েছেন রাজশাহীর এক যুবলীগ নেতা। 

অভিযোগ আছে, শুধুমাত্র রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সন্তুষ্ট করতেই তিনি এমন কাজ করছেন। সে কারণে বিএনপি-জামায়াতের পদযাত্রা কর্মসূচির দিনে যুবলীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র থেকে গুরুত্ব দিলেও ওই সভাপতি প্রার্থীর কাছে গুরুত্ব পায়নি। বিষয়টি রাজশাহীর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজশাহীতে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ছিলো। একই দিনে বিএনপি-জামায়াত চক্রের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতার প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর যুবলীগ তাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। এই ধরনের কর্মসূচিগুলোকে সংগঠনের পাশাপাশি মূল দলের কেন্দ্র থেকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ফলে মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীদের তাগিদ দেয়া হয় এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে। অথচ কর্মসূচিতে যোগ দেয়া তো দূরের কথা, প্রস্তুতিমূলক কোনো কাজও না করে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিনকে নিজে গাড়ি চালিয়ে নাটোরের সিংড়ায় নিয়ে যান মহানগর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী তৌরিদ আল মাসুদ রনি। সিংড়া উপজেলা ও পৌর শাখার সম্মেলনে যোগ দিতে দুই কেন্দ্রীয় নেতা সকালের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসেন। এরপর বিমানবন্দর থেকেই তাদেরকে নিয়ে সিংড়া চলে যান রনি।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়া একাধিক নেতা বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা অভিযোগ করেন, নিজ এলাকায় কেন্দ্র থেকে নির্দেশিত গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি উপেক্ষা করে এভাবে একজন প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতাদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা তার সংগঠনের রাজনীতির চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়টিকে প্রমাণ করে। কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দিলেও যেখানে চলতো, এমনকি তাদেরকে সিংড়া রেখে সেখান থেকে ফিরে এসে কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার সুযোগ ছিলো, কিন্তু তৌরিদ আল মাসুদ রনি সিংড়ার সম্মেলনের মঞ্চে থেকে যাওয়াটা দৃষ্টিকটু বলে মত দেন তারা। এছাড়াও কেন্দ্র থেকে প্রার্থিতার জন্য জীবনবৃত্তান্ত চাওয়ার পর প্রার্থী হতে আগ্রহ জানিয়ে জীবনবৃত্তান্ত দাখিল করা একজন নেতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের এমন অযাচিত ভ্রমণ নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন।
রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন পক্ষপাত মূলক আচরণ আগামী দিনের নগর রাজনীতিতে অশনি সংকেত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী তৌহিদ আল মাসুদ রনি বলেন, এটা কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন হলো? আমি কেনো শান্তি সমাবেশে থাকলাম না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি এমন বলেন। তিনি বলেন, আপনি কি জানেন যুবলীগের জেনারেল সেক্রেটারি মানে কি? তিনি কেন্দ্র থেকে এসেছেন নাটোরে একটি সম্মেলনে, সেখানে আমাদের উপস্থিত থাকা জরুরি ছিলো। এছাড়াও আমাদের রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতির অনুমতিক্রমে আমরা সেখানে যাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে